জাহিদুল ইসলাম আনি এর “ এক কাপ চা ”



এক কাপ চা

................................
সিদু মামা, চা দাও এক কাপ!
জাতি কে আমি আমার লাগামহীন এক কাপ চায়ের ইতিহাস জানাবো আজ।
আমার হাতে প্রতি দিন থাকে চা-ভর্তি কোন এক কাপ,
প্রতিটি কাপই যেন একেকটি ইতিহাস।
খানিক আগে এই কাপে চা খেয়ে গেছে হাজার শিক্ষার্থী -
যে চায়ের - ইতিবৃত্ত-শরন, সানজু,আশিক,সুরাইয়া,মিনহাজ,নদী,জুয়েল, উমে,তারেক,বিল্লাহ,নিশাদ,সুহি,আন্তু।
মনে পড়ে যায় সেই এক কাপ চা না পাওয়ার গল্প- আসেন ভাই বসেন ভাই চা খান চিনি নাই চলে যান।
আবার অন্য দিকে
হাজার স্বপ্ন দেখা ছেলেটির চোখের জল,
লেগে আছে এই চায়ের কাপে।
দরিদ্র্য ছাত্রের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ,
বিসিএস ক্যাডার হবার স্বপ্নে
গলে আছে এই চায়ের কাপে।
হয়তো এই কাপেই চা খেতে খেতেই কোনো কবি লিখে গেছে হাজার কবিতা ।
আবার কেউবা তার জীবনোচ্ছ্বাস গল্প লিখে গেছে এক কাপ চায়ের চুমুতে।
হয়তোবা আবার
কোনো দার্শনিক আবিষ্কার করে গেছে দর্শনের নয়া নয়া ধোঁয়াশা এই এক কাপ চায়েতে ।
হয়তোবা আবার প্রেমবঞ্চিত কোনো কবি কারো অবহেলায় ফেলছে দু ফোঁটা চোখের জল,এই চায়ের কাপে।
বিপ্লবী থেকে নেরুদা ,
অনিন্দ্য থেকে অনু
রিনি থেকে বর্তমান
কবি থেকে অভিনেতা —
প্রত্যেকের মুখস্থ তপ্ত থুতু লেগে এই চায়ের কাপে!
এই ঐতিহাসিক কাপে ঠোঁট ছুঁইয়ে আমি পাই ইতিহাসের ছোঁয়া,
পাই আমার হাজার গল্পের ইতিহাস,
ছুটে পালায় চিন্তারাজ্যে সেই কল্পকাহিনী ছোয়ায়।
এক কাপ চায়ে হাজার স্বপ্ন গল্পের ইতিহাস
বলেছিল শরন শাঁখারি বাজারের শনিবিগ্রহ মন্দির পাশে বসে।
আবার আমি এ এক কাপ চা কে সামনে রেখে কেদেঁছিলাম হতাশার গল্প নিয়ে।
এক 'এক কাপ চায়ের চুমুতে গল্পের ছুটা ছুটি
কখন মাসুদ, সেলিম,মাইদুল,নাহিদ, আবার কখন বা রাজিব এসে বিল না দেওয়ার ইতিহাস।
আবার কখন বা গালিব ভাই,কবির,ভাই,লোটাস ভাই,আমিনুল ভাই, আরিফ ভাই,আনিক ভাই,নাজমুল ভাই সাথে এক কাপ চায়ের গল্পে , ভ্রাতৃত্বের ব্ন্ধনের সৃষ্টি ভালোবাসায় মেতে উঠা।
আবার কখন বা সাইফুল মামার চায়ের দোকানে দল বল নিয়ে এসে ৮/১০কাপ চা খাওয়া।
আবার কখন ও বা মম'র সাথে বকাবকি করে তাড়াতাড়ি চা শেষ করা।
আবার কখনও ব্লাড & হেল্প বন্ধু কামরুল সাথে রক্ত খোজঁ করা এক কাপ চায়ের ফাকেঁ।
আবার কখন ও বা পিচ্ছির সাথে একই কাপের
চুমুকে আত্মভুলা চারেপাশ।
আবার কখন বা জেলাতো বন্ধু ইউনুস সাথে
চায়ের আড্ডায় মেতে থাকা।
আবার কখন ও বিপ্লবী বন্ধু রাকিব সাথে এক কাপ চায়ে সভ্যতার ইতিহাস,১০০ বৎসরের রাজনৈতিক ইতিহাসের এপিঠ ওপিঠ জানা।
আবার কখন বা ঢাবির ক্যাম্পাসে শশির
সাথে মাইলো চা খাওয়ার ইতিহাস ।
আবার কখন ও শিমুল দা চা করে নিয়ে যায় আমার চোখের সামনে দিয়ে শিক্ষকদের জন্য
ইচ্ছে হয় ডাকি দাদা এক কাপ চা হবে কি?
এক কাপ চায়ের জন্য অনেক বন্ধুদের খেয়েছি বকা, নিশাদ,তারেক,সুরাইয়া,হ্যাপি,মৌরি বেশ বকে ছিল এ চা নিয়ে।
তবু ও আমি এক কাপ চায়ের ভিড়ে খুঁজি নিজেকে।
এক কাপ চা যেন শেষ না হয়, তবে আবার ফুরিয়ে যাবে সব ইতিহাস,
থাকবে না গল্প, আড্ডা,বকাবকি, আর ভালোবাসার ইতিহাস।
আমি বিশ্বাস করি —
হাজার বছরের হাজার আয়োজন শেষে,
বহু দূর হতে দ্ব্যর্থক মুচকি হাসি হেসে,
একদিন অনিন্দতা এলো চুলে এসে দাঁড়াবে ভাস্কর্য চত্বরে হয় তো বা শহীদ মিনারে পাশে, না হয় কাঠাঁল তোলার বেঞ্চ বসে
বলবে —
“শত বর্ষের শতেক স্বপ্ন চায়ের কাপে মাখাও;
স্বপ্ন এবার সত্যি তোমার, চা খাও কবি, চা খাও!”
অবশেষে,
স্বপ্ন এবার সত্যি আমার, চা খাও কবি, চা খাও!”

Share on Google Plus

About কালি বিহীন মুক্ত কলম

    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment